
বাতাস ধীরে ধীরে নয়, খুব দ্রম্নততার সঙ্গে ঠান্ডা থেকে ঠান্ডাতর হচ্ছে। ঋতু পরিবর্তনের জানান দিচ্ছে প্রতিক্ষণে। বার্তা দিচ্ছে তৈরি হতে, শীতকে উপভোগ করতে। ঋতুচক্রে শরতের বিদায় হলো মা দুর্গার বিসর্জনের সঙ্গেই। আগমনীর গান গেয়ে এলো হেমন্ত। আবহাওয়া জানান দিচ্ছে- শীত আসছে, খুব দ্রম্নতই আসছে এই নাতিশীতষ্ণ বাংলাদেশে। শহুরে বিলাসিত জীবনে শীত মানেই এক অন্যরকম আমেজ। ভ্রমণ, আড্ডা, ফ্যাস্টিভ্যাল, কনসার্ট কত না আয়োজন। এক স্বর্গীয় ছোঁয়ার আভাস নিয়ে আসে শীতকাল।
শীতকাল এখনো অনেকটাই দেরি। সবে সাজ-সজ্জার শুরু।

কুলসুম বেগমের শনের ঘরের বেড়ার ফাঁকগুলো দিয়ে সূর্যের কিরণের প্রবেশ যেন নতুন দিনের মঙ্গলবার্তা নিয়ে আসে। ইদানীং সেই কিরণ সংকীর্ণ থেকে প্রবল সংকীর্ণের পথে। হয়তো অচিরেই বেড়ার ফাঁকটুকু দিয়ে সূর্যের সেই মঙ্গলবার্তার বাহক কিরণরশ্মি না এসে ইটভাটার ধোঁয়ার ন্যায় সতেজে শীতল কুয়াশাতে হিমের প্রবেশ ঘটবে। ঘড়ির কাঁটা এগারোর দাগ পেরোলেই আমাদের সকাল শুরু- শীতের সকাল। এই অবেলার সকালে সকালে মাংস-খিচুড়ি অথবা অলসতার জেরে অনলাইনে খাবার অর্ডার করে তা দিয়েই সকালের নাস্তা নামক ভূরিভোজ চলে। কখনো অলিতে গলিতে বেড়ে ওঠা ছোট্ট ঝুপড়ির দোকানের গরম পিঠা; গ্রামীণ পদ্ধতি বিলীন শহুরে কায়দায় তৈরি- যা প্রায়শই আমাদের শহুরে লোকজনের সকালের নাস্তা মেনুতে থাকে। দুপুরে চাইনিজ, রাতে নাম না জানা খাদ্য আইটেমের সঙ্গে কফি আড্ডা, মাঝরাতে পার্টি, একের পর এক কনসার্ট, লং ট্রিপ এরকম হরেক রকম চাঞ্চলতার সহিত কেটে যায় আমাদের শহুরে শীতের দিনগুলো। কাকডাকা ভোর, দূরে ফ্যানভাঙা চরের ছোট্ট টিনের একচালা মসজিদ থেকে ব্যাটারির মাইক থেকে ভেসে আসে আযানের ধ্বনি কুলসুম বেগমের কানে। আর তখনই সকাল শুরু হয় কুলসুম বেগমদের।
প্রকাশিত জাতীয় দৈনিকে