
ফেসবুক স্ক্রল করতে করতে তোমার দেয়া পোস্ট সামনে আসে৷ কি সুন্দর মায়াবী হাসি তোমার৷ কত কিছুই লিখতে মন চায় মন্তব্যের ঘরে৷ অন্যদের দেয়া মন্তব্যগুলোতে একটু চোখ বুলিয়ে নেই৷ আমার মনে সৃষ্ট সেই মন্তব্যখানাকে খুঁজে পাই না কারোর মন্তব্যের মাঝে৷ সব প্রতিবন্ধকতা ভুলে যেয়ে আমিও লিখতে শুরু করি৷ অজান্তেই সেই লেখাগুলো শত শব্দ পেরিয়ে হাজারের কোটায় দাঁড়ায় মাঝে মাঝে৷ কিন্তু হঠাৎ করেই নিরবতা ভর করে আমার মাঝে৷ লিখতে যেয়েও থেমে যায় কলম৷ কী-বোর্ডের ব্যাকস্পেসে মুছে যায় শত শব্দের প্রবন্ধ৷ আগুনের লেলিহান শিখা জ্বালিয়ে দেয় হাতে থাকা ধুম্র শলাকাকে৷ যেথায় সদ্য স্থান পেয়েছিলো কলম, কী-বোর্ডের বাটনগুলো৷
সিগারেটের প্রতিটানে আমি নিজের পীড়াকে প্রশমনের ব্যর্থ চেষ্টা করি৷ আবারও শুরু করি স্ক্রোলিং৷ অনেক দূর থেকে দূরে চলে আসি তোমার সেই সদ্য দেয়া পোস্টের অস্তিত্ব থেকে৷ মাঝে মাঝে মনে হয় সেই ছবিখানায় মন্তব্য না করতে পারি, একটা রিয়াক্ট তো দেয়াই যায়৷ বিশ্বাস করো আমার সাহসে কুলায় না৷ অজানা এক ভয়ে তোমার অনলাইন জগৎ, বাস্তব জগৎ সবকিছু থেকে দূরে থাকি৷ তোমায় নিয়ে জমা কথা গুলো আপণ মনে নিজের টাইম লাইনে পোস্ট করি৷ নিজেই পড়ি৷ নিজেই হাসি৷ দারুন না?
তোমার ইনবক্সে আমার দেয়া লাস্ট মেসেজখানা কতবার যে দেখি তার হিসাব নাই৷ অপেক্ষায় থাকি কখন সিন হয়৷ সিন হওয়া মাত্রই নতুন করে বার্তা পাঠাই৷ আজগুবি, লাগামহীন মেসেজে ভরে যায় ইনবক্স৷ ভাগ্যিস অনলাইন মাধ্যমে মেসেজ পাঠাতে কোনো খরচা নেই৷ তা না হলে কবেই আমার নামের পাশে ব্যাংক ঋণ খেলাপীর তকমা থাকতো৷ বলিহারি তোমায়, কিভাবে সহ্য করো আমার এই পাগলামোকে? আমিই তো মাঝে মাঝে নিজের পাগলামোতে অতিষ্ঠ হয়ে উঠি৷ প্রতিরাত আমায় অনুশোচনায় ভোগায় এই কথাটা না বললেই নয়, কেন বললাম, কি ভাববে, আমি যে পাগল ও টের পেলো নাকি, আচ্ছা আমার এই আজগুবি মেসেজের উত্তর যে ও দেয়, আমার প্রতি করুনা করে দেয় না তো? সহানুভূতি দেখায় না তো পাগলের প্রতি?
এইসব ভাবনা আমার খুঁড়ে খুঁড়ে খায় প্রতিটি নির্ঘুম রজনীতে৷ তোমায় অনলাইন বা অফলাইন দর্শনে আমার মধ্যে কি যে বয়ে যায়, তা আমি আজও উপলব্ধি করতে পারিনি৷ সদ্য ভুমিষ্ট হওয়া শিশু যেমন কোনো কিছু না বুঝে পরম আদরের মাঝে থেকেও কেঁদে ওঠে, আমার অবস্থাটাও তেমন৷ আমি বুঝিনা আমার অতিরঞ্জিত হওয়ার কারন, আমি বুঝিনা আমার হাসির কারন, আমি বুঝি না আমার তীব্র চঞ্চলতার কারন৷ যদি বুঝতাম৷ বিশ্বাস করো যদি বুঝতাম, তাহলে তোমায় কেনো ভালোবাসা উচিত নয়, তার কম করে হলেও ৯৯ টা কারন বের করতে পারতাম৷ এই যে তোমার-আমার দুরুত্ব, তোমার অনলাইন, বাস্তব জীবনে আমার চুপ থাকা, এই নীরবতা বা মৌনতা আমাকে নবচেতনায় তোমায় নিয়ে ভাবার সুযোগ করে দেয়৷ এই যে আমি একাকী তোমায় ভালোবেসে যাচ্ছি, এই দারুণ অনুভুতিটাও সুন্দর৷ আমি জানি না দুজনের মাঝে ভালোবাসা হলে তা কেমন হয়, দুজনের মিশ্রিত অনুভূতি কেমন হয়৷ কতটা সুন্দর হয় তার বাস্তবিক রুপ আমার জানা নাই৷ তবে আমি একপাক্ষিক ভালোবেসে যতখানি সৌন্দর্য উপলব্ধি করছি, নিঃসন্দেহে প্রেম স্রষ্টা প্রদত্ত সবচেয়ে সুন্দর সৃষ্টিকল্প আমার কাছে৷ তোমার সেই ছবিখানার নিচে আমার প্রত্যাশিত মন্তব্যখানা না লেখার পিছনে কারন দর্শাতে আমার কতখানি অব্যক্ত কথা প্রকাশিত হলো নিজের অজান্তেই৷ আমার ভাবনায় তুমি এক অসীম, যার কোনো শেষ নাই৷ আমি সাহিত্যিক হলে তুমি হতে আমার এক উপন্যাস৷ যে উপন্যাসের ইতি টানতে আমাকে বারংবার জন্ম নিতে হবে৷